Brands
Discover
Events
Newsletter
More

Follow Us

twitterfacebookinstagramyoutube
Youtstory

Brands

Resources

Stories

General

In-Depth

Announcement

Reports

News

Funding

Startup Sectors

Women in tech

Sportstech

Agritech

E-Commerce

Education

Lifestyle

Entertainment

Art & Culture

Travel & Leisure

Curtain Raiser

Wine and Food

YSTV

ADVERTISEMENT
Advertise with us

লিমকা বুক অব রেকর্ডে উজ্জ্বল সাই কৌস্তুভ

লিমকা বুক অব রেকর্ডে উজ্জ্বল সাই কৌস্তুভ

Wednesday February 21, 2018 , 3 min Read

সাই কৌস্তুভ। নব্বই শতাংশ শারীরিক ভাবে প্রতিবন্ধী এই সাধক তাঁর শরীরে বাধাকে তুচ্ছ করে পৃথিবীর বুকে একটা দাগ কেটে ফেলেছেন ইতিমধ্যেই। ঢুকে পড়েছেন বিশ্ব রেকর্ডের দৌড়ে। ২০১৮ সালের লিমকা বুক অব রেকর্ড, ইন্ডিয়া বুক অব রেকর্ডস এবং এশিয়া বুক অব রেকর্ডসে উঠেছে তাঁর নাম। শরীরের মাত্র একটি আঙুলই নাড়াতে পারেন। সেই বাঁ হাতের একটি আঙুল দিয়েই তিনি মিনিটে ২৪ টি শব্দ টাইপ করার বিরল নজির গড়েছেন। 
image


আর তাঁর এই অত্যাশ্চর্য ক্ষমতার স্বীকৃতি দিল লিমকা। অস্টিওজেনেসিস ইম্পারফেক্টা নামের একটি বিরল রোগের শিকার কৌস্তুভ। এই রোগের অপর নাম ব্রিটেল বোন ডিজিজ। মূলত জিনগত ব্যাধি। পনের হাজারে একজনের এই রোগ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। হাড় ভাঙতে থাকে। চোখের সাদা অংশে নীল ছোপ পড়ে। শ্রবণেন্দ্রিয় বিকল হয়ে যায়। দাঁতের কাঠামো বদলাতে থাকে। চলাচল করার ক্ষমতা হারিয়ে যায় রোগাক্রান্তের। শরীর অথর্ব হয়ে পড়ে। এই বিরল রোগের নির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই। যন্ত্রণা নিরাময় শুধু করতে পারা যায়। শিলিগুড়ির ছেলে কৌস্তুভের এই রোগ ধরা পড়ে খুব ছোটবেলায়। ওর নাচের খুব উৎসাহ ছিল। প্রতিভাও। মা এবং ঠাকুমা দুজনেই ধ্রুপদী সঙ্গীতের সাধক। ফলে সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডল ছোটবেলা থেকেই পান কৌস্তুভ। কিন্তু রোগের ধরণ টের পেয়ে চিকিৎসক নাচ বন্ধ করে দিতে বলেন। একটু একটু করে হাড় গুলো ভাঙতে শুরু করে। যন্ত্রণাকে সয়ে যাওয়ার অপার শক্তি পান আধ্যাত্মিক চৈতন্যের ভিতর দিয়ে। আর সঙ্গীতের মধ্যে খুঁজে পান নিজের জীবন। নিকট সান্নিধ্য পান সাই-বাবার। পুর্তাপুর্তিতে চলে আসেন চিকিৎসার সন্ধানে। কৌস্তুভের শরীরের অস্থি-সন্ধিগুলি অকেজো হয়ে গিয়েছে। স্বয়ংক্রিয় হুইলচেয়ারেই কাটে দিন। শরীরের বিভিন্ন জায়গায় পঞ্চাশটিরও বেশি হাড় ভেঙে গিয়েছে। ডান হাতের কব্জি দুমড়ে আছে। ডান হাতের হাড়টাই সবার আগে ভাঙে। সাড়ে তিন বছর বয়সে। বাঁ হাতের দুটো আঙুল ছাড়া কোনও অঙ্গ সঞ্চালন করতে পারেন না কৌস্তুভ। তাই নিয়েই ক্রমাগত কাজ করে চলেছেন এই বিরল প্রতিভার মানুষটি। আন্তর্জাতিক মানের ডিজাইনার কৌস্তুভ। লিখেছেন নানান গ্রন্থ। মাই লাইফ, মাই লাভ, মাই ডিয়ার স্বামী এই বইটি দেশের নয়টি ভাষায় অনুদিত হয়েছে।

১৯৯৬ সালে প্রথম দর্শন হয় সাঁই বাবার সঙ্গে। সেই থেকেই জীবনের দিশা খুঁজে পান তিনি। সাঁই বাবার স্নেহের পরশ মন্ত্রের মত কাজ করে। শরীরের সঙ্গে লড়াই করার শক্তি খুঁজে পান। শরীরকে তাচ্ছিল্য করার স্পর্ধাও। পড়াশুনোর পাশাপাশি একটু একটু করে শিখে ফেলেন কম্পিউটার। সাঁই বাবার প্রেরণায় ইন্টারনেটের সঙ্গে পরিচয় হয়। অনলাইনেই ইউটিউব টিউটোরিয়াল দেখে শিখে ফেলেন গ্রাফিক্স ডিজাইনিং। ২০০৯ সাল থেকে ক্রমাগত বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে ডেস্কটপ ডিজাইন করতে শুরু করেন। ২০১২ সালে তাঁর ডিজাইন করা ডেস্কটপ সাঁই বাবার নামে উৎসর্গ করেন। তারপর থেকেই রেডিও সাঁইয়ের সোশ্যাল মিডিয়া টিমের ডিজাইনিং করার পাকাপাকি কাজ পান তিনি। পরিচিতি বাড়তে থাকে। পরিচিতি যত বেড়েছে পসারও বেড়েছে কৌস্তুভের। সেই সুবাদে আরও বেশি বেশি করে কম্পিউটারের সঙ্গে টাইপিংয়ের সঙ্গে সম্পর্ক বাড়তে থাকে। অভ্যস্ত হতে থাকেন কি বোর্ডে। টাইপিং স্পিড এতটাই বাড়ে যার সুবাদে আজ সাঁই কৌস্তুভ পেলেন বিশ্ব রেকর্ডের তকমা।

উল্লেখ্য কৌস্তুভ পাশাপাশি সঙ্গীত শিল্পী, সুরকার, গীতিকার হিসেবে ইতিমধ্যেই সুপরিচিত। ছোটবেলা থেকেই আকাশবাণী, দূরদর্শনে নিয়মিত গান গাওয়ার সুযোগ পেয়েছেন। পুরস্কারও পেয়েছেন অনেক। অনুপ জলোটা, অনুরাধা পোড়ওয়েল, মান্না দের মত শিল্পীদের সঙ্গে গান গাওয়ার সুযোগ হয়েছে। ক্যাসেটও প্রকাশিত হয়েছে বেশ কয়েকটি। পাশাপাশি সুবক্তা হিসেবে টেডেক্সে ভাষণ দিয়েছেন কৌস্তুভ। প্রেরণাদায়ী ভাষণ দিতে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে আমন্ত্রিত হয়েছেন। সাম্প্রতিক লিমকা বুক অব রেকর্ডস ২০১৮, ইন্ডিয়া বুক অব রেকর্ডস ২০১৮ এবং এশিয়া বুক অব রেকর্ডসে তার জায়গা পাওয়ার ঘটনায় স্বভাবতই খুশি এই বিরল প্রতিভাধর মানুষটি। আপ্লুত তাঁর প্রিয়জনেরাও।